পোখরা শহরটি কাঠমন্ডূ থেকে ২০০ কিলোমিটার বা ১২০ মাইল দূরে অবস্থিত। এটি কাঠমন্ডূ শহরের পশ্চিমে অবস্থিত। পোখরা উপত্যকার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে শহরটি অবস্থিত। এই উপত্যকা দিয়ে স্বেত গন্ধকি নদী বা সাদা নদী প্রবাহিত হয়েছে। এই শহরটি থেকে ১৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যেই অন্নপূর্না রেঞ্জ অবস্থিত।

বিশ্বের সর্বোচ্চ দশটি পর্বতশৃঙ্গের মধ্যে তিনটি রয়েছে এই পর্বতমালায়, এগুলি হল- ধবলগিরি, অন্নাপূর্না ১ ও মাকালু। এই শহরে রয়েছে পর্বত আরোহনের বেস ক্যাম্প। এখানে পর্বতারোহীরা আসেন পর্বতে উঠার জন্য। এখানে রয়েছে গোরখা সেনাদের বসবাস। পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে শহরটি খুবই পরিচিত।

অবস্থানঃ পোখরা শহরটি একটি পার্বত্য উপত্যকায় গড়ে এঠেছে। শহরটি সর্বোচ্চ ১৭৪০ মিটার ও সর্বনিম্ন ৮২৭ মিটার উঁচু। ফলে শহরটিতে মাত্র এক কিলোমিটারের ব্যবধানে উচ্চতার বিরাট পরিবর্তন ঘটে। শহরটি অন্নাপূর্না পর্বত শ্রেনীর একটি অংশে ও হিমালয় পর্বতের মধ্য এলাকায় অবস্থিত।এই উপত্যকার প্রধান নদী হল স্বেত গন্ধকি। উপত্যকাটিতে এই নদীর বহু উপনদী রয়েছে। নদীটি কিছু জায়গায় মাত্র কয়েক মিটার চওড়া।
ফেওয়া হ্রদ: ফেওয়া হ্রদ নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদ। উপত্যকায় অবস্থিত একটি স্বাদুপানির হ্রদ। সারাংকোট এবং কাসিকোট গ্রামের সন্নিকটে এই হ্রদের অবস্থান। প্রাকৃতিক ঝর্ণা এই হ্রদের পানির উৎস হলেও বাধের মাধ্যমে পানি ধরে রাখা হয়, তাই এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক হ্রদ নয়।ফেওয়া হ্রদ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকা নেপালের পোখারা অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ফেওয়া হ্রদের উত্তর প্রান্ত পোখারার পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠেছে। এই এলাকা সাধারণভাবে লেক-সাইড নামে পরিচিত।

ডেভিস ফলঃ পোখরা বিমান বন্দর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ঝর্না। যার উৎপত্তি ফেওয়া হ্রদ থেকে। যার আভিধানিক অর্থ হল পাতাল কো চাঙ্গো মানে "আন্ডারওয়ার্ল্ডের জলপ্রপাত" নেপালের কাস্কি জেলার পোখরাতে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত।
বর্ষাকালে এর সৌন্দর্য বাড়ে, যখন জলপ্রপাতের স্রোত আরও তীব্র হয়। জনশ্রুতি আছে, ১৯৬১ সালে এক সুইজারল্যান্ডের পর্যটক মিসেস ডেভিস এই জলপ্রপাতে পড়ে মারা যান, সেই থেকে এর নাম ডেভিস ফল রাখা হয়। জলপ্রপাতের কাছে একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে, যা প্রায় ৫০০ ফুট (১৫০ মিটার) দীর্ঘ এবং ১০০ ফুট (৩০ মিটার) মাটির নিচে চলে গেছে।

বাইদাম: ফেওয়া হ্রদের পূর্ব প্রান্ত বাইদাম নামে পরিচিত। এখানে সুপ্রচুর হোটেল, লজ, রেস্তোরা, বইয়ের দোকান ও স্যুভেনিরের দোকান অবস্থিত। এটি নেপালের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ। পোখারায় আগত পর্যটকরা সাধারণত এখান থেকেই তাদের গন্তব্য শুরু করে।
মাকালুঃ পৃথিবীতে পঞ্চম উচ্চতম পর্বত, যার উচ্চতা ২৭,৮৩৮ ফুট। যা মাউন্ট এভারেস্ট থেকে ২২ কিমি (১৪ মাইল) পূর্বে অবস্থান। মাকালু একটি বিচ্ছিন্ন চূড়া যার আকৃতি একটি চৌকোণা পিরামিড। আরোহণের জন্য এটি বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পর্বত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই পর্বতে ২৩৪ জন আরহন করেছেন এবং ২৬ জন মৃত্যু বরণ করেছেন।
নেপালের মধ্যে পোখরা শহর কাঠমন্ডূ পর সবচেয়ে বড় শিক্ষা ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত। এখানে মেডিকেল কলেজ ও ইনঞ্জিরিয়ারিং কলেজ রয়েছে। এছাড়া অনেক ডিগ্রি কলেজ আছে এখানে। পর্বতারোহণের জন্য এই শহরে পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে।
- পোখরা মেডিকেল কলেজ
- পোখরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- গণ্ডকী বোর্ডিং স্কুল
- হিমাচলপ্রদেশ বোর্ডিং স্কুল
যাতায়াতঃ কাঠমন্ডূ থেকে পোখরা যেতে প্রায় ১ ঘন্টা ৫৩ মিনিট সময় লাগে, ট্রান্সফার সহ। কাঠমান্ডু থেকে পোখরায় যাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হল বিমানে যাতায়াত, যার জন্য ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট সময় লাগে এবং খরচ ৯৫-১৩০ ডলার । বিকল্পভাবে, আপনি বাসে যেতে পারেন, যার খরচ ১৫-১৮ ডলার, সময় লাগে প্রায় ৯ ঘণ্টা ।
প্যাকেজর মধ্যে যা যা থাকছে: ১) ঢাকা-নেপাল-ঢাকা সরাসরি বিমানের টিকেট। ২) ৩ রাত হোটেল ভাড়া (কাঠমন্ডূ ১ রাত, পুখারা ২ রাত), ৩) এয়ারপোর্ট ট্রান্সপোর্ট সুবিধা, ৪) সকালের নাস্তা,