পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার- ইউনেস্কো স্বীকৃত বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক স্থান। Presented by Rebati Air Travels.

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক স্থান, যা রাজশাহী বিভাগের নওগা জেলার বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত। পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব (৭৮১-৮২১) অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। ইউনেস্কোর মতে পাহাড়পুর বিহার বা সোমপুর বৌদ্ধ বিহার দক্ষিণ হিমালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার। উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, মায়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।

Rebati


পাহাড়পুরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

১. বৌদ্ধ বিহার: পাহাড়পুর বিহারের ইতিহাস অনেক প্রাচীন, এটি ৭ম শতাব্দী থেকে ১২শ শতাব্দী পর্যন্ত বিখ্যাত ছিল। এটি বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের জন্য একটি অন্যতম তীর্থস্থান ছিল।

২. বিশাল আকারপাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার দক্ষিণ হিমালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার।, এবং এটি একটি বিশাল বিহার ছিল যা ১৫৫টি কক্ষের সমন্বয়ে গঠিত। এর মূল আকৃতি ছিল একটি ত্রিভুজাকৃতি বৌদ্ধ বিহার, যা বিশেষ করে পাথরের খোদাই করা কাজের জন্য বিখ্যাত। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্ম শিক্ষাদান কেন্দ্র ছিল। শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, মায়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। 

৩. ইতিহাসপালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব (৭৮১-৮২১) অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন।

প্রাকৃতিক গুরুত্ব:

১. পাহাড়ী পরিবেশ: পাহাড়পুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও অনন্য। এটি একটি পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর চারপাশে প্রকৃতির অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। বর্ষা মৌসুমে এখানে সবুজের সমারোহ চোখে পড়ার মতো।

২. বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ: পাহাড়পুর অঞ্চলে অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী পাওয়া যায়। বিশেষ করে বন্যপ্রাণী এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদের অন্যতম অংশ।

৩. পর্যটন স্থান: পর্যটকরা এখানকার ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী উপভোগ করতে আসে। অনেক দর্শনার্থী এখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং প্রকৃতির সংমিশ্রণ দেখতে আসেন।

পাহাড়পুরের ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক গুরুত্বের কারণে এটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে গণ্য হয় এবং এটি দেশের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অংশ।

পাহাড়পুর বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান, বিশেষ করে তার ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কারণে। এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির সংমিশ্রণস্থল হিসেবে দেশের ও আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। নিচে পাহাড়পুরের পর্যটন স্থান সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য দেয়া হলো:

১. পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার:

  • বিশাল আকার: পাহাড়পুর বিহারটি আকারে বিশাল এবং প্রাচীন বৌদ্ধ স্থাপত্যের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। বিহারেরস্থাপত্য নকশা এবং পাথরের খোদাই করা কাজ দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।

  • উন্নত প্রাচীন বিজ্ঞান ও ধর্মীয় শিক্ষা: বিহারটি প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষা এবং সংস্কৃতির একটি কেন্দ্র ছিল, যেখানে হাজার হাজার বৌদ্ধ সাধু এবং পুণ্যার্থী আসতেন।

  • বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান: এটি ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৮৫ সালে "বিশ্ব ঐতিহ্য" হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়, যা এর আন্তর্জাতিক গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

২. বিহারের বিভিন্ন স্থাপত্য এবং প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ:

  • প্রাচীন বিহারের ধ্বংসাবশেষ: পাহাড়পুর বিহারের চারপাশে অনেক প্রাচীন স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে, যা ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয়।

  • মন্দির ও ভাস্কর্য: এখানে বিভিন্ন মন্দির, বৌদ্ধ ভাস্কর্য, এবং গুহাগুলি রয়েছে যা প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে।

৩. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:

  • বর্নিল সবুজ ভূমি: পাহাড়পুরের চারপাশের প্রকৃতি খুবই সুন্দর। গাছপালা, পাখির কিচিরমিচির, এবং পাহাড়ি পরিবেশ সব কিছুই পর্যটকদের জন্য একটি প্রশান্তি উপভোগের সুযোগ দেয়।

  • বর্ষাকালীন সৌন্দর্য: বর্ষাকালে পাহাড়পুরের দৃশ্য আরও মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে, যেখানে সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে।

৪. পর্যটন সুবিধা:

  • যাতায়াত ব্যবস্থা: পাহাড়পুর বিহার  নওগাঁ থেকে দূরত্ব প্রায় ৩২ কিলমিটার। অথবা জয়পুরহাট জেলায় এসে সেখান থেকে বাস কিংবা অটোরিক্সা ভাড়া করে সহজে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার আসতে পারবেন। জয়পুরহাট হতে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

  • পর্যটন কেন্দ্র: পাহাড়পুর অঞ্চলে কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও রেস্ট হাউস রয়েছে যেখানে পর্যটকরা বিশ্রাম নিতে পারেন।

  • স্থানীয় বাজার: পর্যটকরা এখানে স্থানীয় বাজারে বৌদ্ধ সংস্কৃতির স্মৃতিচিহ্ন, বিভিন্ন প্রকার হস্তশিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী কিনতে পারেন।

৫. সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসব:

  • পাহাড়পুর বিহারের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান: এখানে বৌদ্ধ ধর্মীয় উৎসব এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে পর্যটকরা অংশ নিতে পারেন।

  • স্থানীয় মেলা ও পণ্যের প্রদর্শনী: বৌদ্ধ সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন মেলা এবং প্রদর্শনীও এখানে অনুষ্ঠিত হয়, যা পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ হতে পারে।

৬. প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য:

  • জীববৈচিত্র্য: পাহাড়পুরঅঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ রয়েছে। এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা, যেখানে তারা প্রকৃতির মধ্যে হারিয়ে যেতে পারে।

৭. পর্যটন ব্যবস্থাপনা:

  • ট্যুরিস্ট গাইড: পাহাড়পুরের ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য অভিজ্ঞ গাইড পাওয়া যায়, যারা বিহারের ইতিহাস এবং সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারে।

  • বিশ্রামাগার: কিছু রেস্ট হাউস এবং হোটেল রয়েছে যেখানে পর্যটকরা থাকতে পারেন এবং বিশ্রাম নিতে পারেন।

৮. পাহাড়পুরের কাছাকাছি অন্যান্য পর্যটন স্থান:

  • গোবিন্দগঞ্জ: পাহাড়পুর থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত একটি সুন্দর গ্রাম, যা তার ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজ এবং স্থাপত্যের জন্য পরিচিত।

  • রাজশাহী শহর: পাহাড়পুর থেকে রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থল খুব কাছেই, যেখানে অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থান যেমন, বাবু পুকুর, মহানন্দা নদী, এবং শাহ মখদুম মাজারও রয়েছে।

পাহাড়পুর একটি আদর্শ পর্যটন স্থান, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির মিশ্রণ একসাথে দেখা যায়। এটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে এবং দেশের তথা আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি অমূল্য স্থান।

  •  অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যে কোন গন্তব্বের ফ্লাইটের টিকেট কাটুন সবচাইতে কম দামে। টিকেট কাটতে ভিজিট করুনঃ https://rebati.xyz/

    অথবা কল করুনঃ 09617464331
    অফিসের ঠিকানা :
    রেবাতি এয়ার ট্রাভেলস
    ফ্ল্যাট# ৫-বি, বাড়ী# ০৬, রোড# ০৪,
    ব্লক# এ, সেকশন# ১০, মিরপুর,
    ঢাকা-১২১৬।
    ২৪/৭ হট-লাইনঃ 09617464331
    Whatsapp: 01898876901
    E-mail: rebatiairtravels@gmail.com


Comments

Popular posts from this blog

Singapore! A vibrant mix of modern marvels and cultural richness.

The Maldives is a tropical paradise renowned for its stunning white-sand beaches

Thailand, officially the Kingdom of Thailand, is a Southeast Asian country with a rich history