লালবাগের কেল্লা (Lalbagh Fort)- মুঘল সাম্রাজ্যের অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন- রেবাতী এয়ার ট্র্যাভেলস।

 লালবাগ (Lalbagh) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের একটি বিখ্যাত উদ্যান বা উদ্যানপার্ক। এটি বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো ও বৃহত্তম উদ্যানগুলোর মধ্যে একটি এবং এর ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক গুরুত্ব রয়েছে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো:



১. অবস্থান

লালবাগ উদ্যান ঢাকা শহরের পুরান ঢাকার হাজারীবাগ এবং সিদ্দিকবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে অবস্থিত। এর অবস্থান শহরের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি হওয়ায় এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।

২. ইতিহাস

লালবাগ উদ্যানটির ইতিহাস প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। সম্রাট আওরঙ্গজেবের ৩য় পুত্র, মুঘল রাজপুত্র আজম শাহ বাংলার সুবেদার থাকাকালীন ১৬৭৮ সালে এটার নির্মাণকাজ শুরু করেন। ১৮৪৪ সালে এলাকাটি "আওরঙ্গবাদ" নাম বদলে "লালবাগ" নাম পায় এবং দুর্গটি পরিণত হয় লালবাগ দুর্গে। সেই থেকে এখনো পর্যন্ত এটি লালবাগ কেল্লা নামে পরিচিত।

৩. স্থাপনা

লালবাগ উদ্যানের মধ্যে রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা। দুর্গটি হচ্ছে তিনটি ভবন স্থাপনার সমন্বয় (মসজিদ, পরী বিবির সমাধি ও দেওয়ান-ই-আম), সাথে দুটি বিশাল তোরণ ও আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত মজবুত দুর্গ প্রাচীর। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ

  • লালবাগ কেল্লা (Lalbagh Fort): এটি মুঘল আমলের একটি দুর্গ যা ১৬৭৮ সালে নির্মাণ শুরু হয়েছিল। যদিও এটি কখনোই সম্পূর্ণ হয়নি, এটি এখনও দর্শনার্থীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।


  • নিশাত বাগ: এখানে অনেক প্রজাতির ফুল এবং গাছ রয়েছে, যা উদ্যানটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে

  • পরীবিবির সমাধিঃ ১৬৮৪ সালে এখানে শায়েস্তা খাঁর কন্যা ইরান দুখত রাহমাত বানুর (পরী বিবি) মৃত্যু ঘটে। শায়েস্তা খাঁ তার কন্যার স্মরণে এই মনমুগ্ধকর মাজারটি নির্মাণ করেন। লালবাগ কেল্লার তিনটি বিশাল দরজার মধ্যে বর্তমানে জনসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত । এই দরজা দিয়ে ঢুকলে বরাবর সোজা চোখে পড়ে পরী বিবির সমাধি।



  • শাহী মসজিদঃ সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র শাহজাদা আজম বাংলার সুবাদার থাকাকালীন তিন গম্বুজওয়ালা দুর্গ মসজিদ এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন ১৬৭৮-৭৯ খ্রিষ্টাব্দে। আয়তাকারে (১৯.১৯ মি: × ৯.৮৪ মি) নির্মিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি এদেশের প্রচলিত মুঘল মসজিদের একটি আদর্শ উদাহরণ। বর্তমানেও মসজিদটি মুসল্লিদের নামাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে।



৪. প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য

লালবাগ উদ্যানটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে রোপিত গাছপালা, ফুল এবং সৌন্দর্যপূর্ণ জলাশয়ে পরিপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা এবং ফুলের সংমিশ্রণ রয়েছে যা দেশের ফুল ও গাছের নানা প্রজাতির প্রদর্শনী উপস্থাপন করে।

Rebati


৫. ভ্রমণ এবং দর্শন

এটি ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান এবং দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে ভ্রমণ করতে আসে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের প্রদর্শনী, গাছপালা এবং শীতকালীন সময়ে বিশেষ ফুলের প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়।

৬. আয়োজন

লালবাগ উদ্যানের মধ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়, যেমন: ফুলের মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ধরনের উৎসব ইত্যাদি।

৭. পরিবহন সুবিধা

লালবাগ উদ্যান ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এটি সহজেই যেকোনো স্থান থেকে বাসে গুলিস্থান নেমে রিকশা, সিএনজি বা ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে পৌঁছানো যায়।

সবচাইতে সহজ হচ্ছে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঢাকার আজিমপুর এসে, সেখান থেকে রিকশা অথবা ঘোড়ার গাড়িতে করে পৌঁছানো যায়।

৮. গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • এখানে আসার সময় অবশ্যই পানি সঙ্গে নিয়ে আসা উচিত।

  • উদ্যানের সঠিক সময়ে ভ্রমণ করতে হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সকালে আসা ভালো।

এটি শুধু ঢাকার নয়, বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক স্থান।


১. যাতায়াত ও প্রবেশ

লালবাগ উদ্যান ঢাকা শহরের পুরান ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, যা বেশ সহজে পৌঁছানো যায়। আপনি বিভিন্ন উপায়ে এখানে পৌঁছাতে পারেন:

  • বাস/ট্রাক: ঢাকা শহরের গুলিস্থান থেকে ঘোড়ার গাড়ি দ্বারা সহজে লালবাগ যেতে পারেন। উদ্যানের কাছাকাছি কিছু বাসস্ট্যান্ড রয়েছে।

  • রিকশা ও সিএনজি: ঢাকা শহরের গুলিস্থান অথবা আজিমপুর থেকে রিকশা বা সিএনজি গাড়ি নিয়ে সরাসরি লালবাগ উদ্যান পৌঁছানো যায়।


  • ব্যক্তিগত গাড়ি: যারা নিজের গাড়িতে আসতে চান, তারা সহজেই উদ্যানের পার্কিং সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন।

২. পর্যটন শীর্ষ স্থান

লালবাগ উদ্যানের মধ্যে কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে:

  • লালবাগ কেল্লা (Lalbagh Fort): এটি মুঘল আমলের একটি ঐতিহাসিক দুর্গ। এটি নির্মাণাধীন অবস্থায় অটুট রেখে, দুর্গটি পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য দর্শনীয় স্থান।

  • ফুলের বাগান: লালবাগ উদ্যানের বিভিন্ন প্রজাতির ফুলে সজ্জিত বাগান। এখানে বিভিন্ন রঙের এবং জাতের ফুলের দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। বিশেষত শীতকালীন সময়ে এটি আরও সুন্দর হয়ে ওঠে।

  • জলাশয়: উদ্যানের মধ্যে ছোট ছোট পুকুর এবং জলাশয় রয়েছে, যেখানে অনেক অতিথি পাখি আসে। এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ দেয়।

  • নিশাত বাগ: এখানে বাগান সাজানোর নানান রকম স্টাইল দেখা যায়, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য খুবই জনপ্রিয়।

৩. সেরা সময় ভ্রমণ

  • শীতকাল: শীতকালে লালবাগ উদ্যান সবচেয়ে সুন্দর হয়, কারণ এই সময় উদ্যানটি ফুলে ফুলে ভরে থাকে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

  • শুক্রবার এবং ছুটির দিন: সাধারণত ছুটির দিনে বা শুক্রবারে এই উদ্যানটি আরও বেশি দর্শনার্থী পায়, কারণ তখন পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে এখানে সময় কাটাতে আসে। তবে, আপনি যদি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তাহলে বিকেল বা সাপ্তাহিক কর্মদিবসে আসতে পারেন।

৪. ভ্রমণ অভিজ্ঞতা

  • প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: এখানে গাছপালা, ফুল, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণী দেখে খুব ভালো লাগবে। বিশেষত সকালে উদ্যানটি আরও সজীব থাকে এবং একেবারে তাজা বাতাস নিতে পারবেন।

  • ঐতিহাসিক শিক্ষা: লালবাগ কেল্লা বা দুর্গটি একটি ঐতিহাসিক স্থান, যা মুঘল আমলের স্থাপত্যশিল্প এবং সংস্কৃতির একটি অসাধারণ নিদর্শন। এখানে গাইড থাকলে, তারা আপনাকে লালবাগ দুর্গের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানাবে।

  • ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক উপাদান: লালবাগ উদ্যানের আশেপাশে অনেক পুরানো মসজিদ এবং মাদরাসা রয়েছে, যা আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে আরও বিশেষ করবে।

৫. খাবার ও পানীয়

লালবাগ এলাকায় বেশ কিছু খাবারের দোকান এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেখানে আপনি স্থানীয় খাবার উপভোগ করতে পারেন। পুরান ঢাকার বিখ্যাত কিছু খাবার, যেমন ভুনা খিচুড়ি, ফুচকা, চটপটি বা বিরিয়ানি খেতে পারেন। এছাড়া, উদ্যানের ভেতরে কিছু খাবার বিক্রেতা পাওয়া যায়, যাদের থেকে ঠাণ্ডা পানীয় বা স্ন্যাক্স কিনে নেওয়া যেতে পারে।

৬. আয়োজন ও অনুষ্ঠান

  • ফুলের মেলা: লালবাগ উদ্যানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এখানে নিয়মিত ফুলের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষত শীতকাল এবং বসন্তকালে এই ধরনের মেলা আরও বেশি জনপ্রিয়।

  • সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: মাঝে মাঝে এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন নাচ, গান বা নাটক অনুষ্ঠিত হয়, যা দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জন করে।

৭. দর্শনীয় স্থান থেকে ফিরে আসা

ভ্রমণ শেষে, আপনি ঢাকার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানেও যেতে পারেন যেমন জাদুঘর, রাজধানী প্রাসাদ, স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি।

লালবাগ উদ্যানের ভ্রমণ সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এটি একটি জায়গা, যেখানে আপনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা একসাথে উপভোগ করতে পারবেন।


  •  অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যে কোন গন্তব্বের ফ্লাইটের টিকেট কাটুন সবচাইতে কম দামে। টিকেট কাটতে ভিজিট করুনঃ https://rebati.xyz/

    অথবা কল করুনঃ 09617464331
    অফিসের ঠিকানা :
    রেবাতি এয়ার ট্রাভেলস
    ফ্ল্যাট# ৫-বি, বাড়ী# ০৬, রোড# ০৪,
    ব্লক# এ, সেকশন# ১০, মিরপুর,
    ঢাকা-১২১৬।
    ২৪/৭ হট-লাইনঃ 09617464331
    Whatsapp: 01898876901
    E-mail: rebatiairtravels@gmail.com



Post a Comment

Previous Post Next Post